ব্লগিং করে অনলাইন ইনকাম-১ : কিভাবে নিশ নির্বাচন করবেন?

আপনি যদি ব্লগিং করে কীভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয় তা শিখতে চান, তাহলে এই ব্লগিং গাইডলাইন আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে যার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

ব্লগিং করে অনলাইন ইনকাম-১ : নিশ নির্বাচন

আপনি যদি ব্লগিং করে কীভাবে অর্থ উপার্জন করতে হয় তা শিখতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমেই তথাকথিত গুরুদের অতিরঞ্জিত উপদেশ পড়া বাদ দিতে হবে।

কি বলে এসব গুরুরা, “তারা আপনাকে উপদেশ দিবে ব্লগিং করতে চাইলে আপনার প্যাশন বা ইন্টারেস্ট নিয়ে একের পর এক ধারাবাহিকভাবে লেখার এবং প্রতিনিয়ত নতুন কন্টেন্ট পাবলিশ করার পরামর্শ দেয়।“

এরপর, এখন থেকে কয়েক বছর পরে আপনার ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক আসবে, তখন আপনি আপনার ব্লগে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম, গুগল অ্যাডসেন্স, অনলাইন কোর্স, পডকাস্টিং বা ডিজিটাল পণ্য বিক্রির মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।

কঠিন সত্য হচ্ছে, ব্লগিং করে অনলাইনে ইনকাম করার জন্য আপনাকে বছরের পর বছর সময় নিতে হবে না।

আপনার ব্লগ থেকে দ্রুত ইনকাম করার জন্য, আপনাকে একজন কোম্পানির সিইও’র মতো ভাবতে হবে এবং আপনার ব্লগকে স্টার্টআপ বিজনেস হিসেবে ট্রীট করতে হবে, শখ হিসেবে নয়।

আমি আশা করি যে, এই ব্লগিং গাইডলাইন আপনাকে সঠিক পথ দেখাবে যা ফলো করে আপনি আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

আর ব্লগিং শুরু করার প্রথম স্টেপ হচ্ছে, সঠিক নিশ সিলেক্ট করা। এপর্বে আমরা কিভাবে আমাদের জন্য পার্ফেক্ট নিশ সিলেক্ট করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা করবো।

চলুন শুরু করা যাক …

ব্লগিং নিশ নির্বাচন করার সঠিক পদ্ধতি

আপনার প্যাশন বা ইন্টারেস্ট নয়, মার্কেট ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে আপনার ব্লগের নিশ বা টপিক সিলেক্ট করুন।

আপনি জানেন কি – গুরুরা কি বলে… ৯৫% ব্লগার এই একটি কারণে ব্লগিং বিজনেসে ব্যর্থ হয়।

তাদের প্রতিষ্ঠিত মিথ হচ্ছে, ব্লগাররা ফেইল করে কারণ তারা যথেষ্ট পরিমানে আগ্রহী ছিল না।

আপনি যদি গুগোলে সার্চ করেন যে, “কেন ব্লগাররা ফেইল করে” তাহলে আপনি যে উত্তর পাবেন সেখানেও দেখতে পারবেন যে “ব্লগারদের আগ্রহ ছিল না”।

কিন্তু, আমি ব্যাক্তিগত ভাবে এই ধারণার সাথে একমত না।

আমার কাছে, যে কারণে একটা বিজনেস ফেইল করে ঠিক একই কারণে ব্লগাররাও ব্যর্থ হচ্ছে। আর সেই কারণটি হচ্ছে যে নিশটি লাভজনক ছিল না।

উদাহরণস্বরূপ, আমি আমার প্যাশন নিয়ে কাজ করতে চাই… ওকে!

এখন আমি অনেক কিছু নিয়েই প্যাশনিয়েট বা আগ্রহী, যেমন – বিমান চালানো, ভ্রমণ, গান শুনা, মুভি দেখা, ঘুমানো, আড্ডা দেয়া, ইত্যাদি আরও অনেক কিছু আছে।

যাইহোক, যদি আমি এই বিষয়গুলির উপর অসংখ্য পরিমাণে ব্লগ পোস্ট লিখার পরে কোন ইনকাম করতে না পারি তাহলে এর অর্থ আমি আমার সময় নষ্ট করলাম।

উপরন্তু, কিছু ব্লগার দাবি করেন, “আমি অর্থের জন্য ব্লগিং করি না” বা, “এটি কেবলই আমার শখ মাত্র।”

যারা শখের ব্লগার তারা অনেকেই জানে না যে কিভাবে তার ব্লগকে ব্যবহার করে অনলাইনে ইনকাম করতে হয়।

তাই, নতুন যারা ব্লগিং শুরু করেন শুধুমাত্র তার প্যাশন বা আগ্রহের উপর, একটা জরিপে দেখা গেছে যে তারা এক-দুই বছরের মধ্যেই ব্যর্থ হয়ে তাদের ব্লগ বন্ধ করে দেয়।

এছাড়াও, গুগলের টপ পজশনে যারা আছে তাদের টিপস গুলো আপডেটেড না। কারণ তাদের কন্টেন্ট গুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে গুগলে টপ পজিশনে থাকে।

ব্লগাররা আগ্রহের অভাবের কারণে ব্যর্থ হয় না। মূলত ব্লগাররা ব্যর্থ হয় কারণ তারা তাদের ব্লগটিকে শখের পরিবর্তে বিজনেসে রূপান্তর করতে না পারার জন্য।

এছাড়াও তারা লো-ভ্যালু বা অ-লাভজনক নিশ বা টপিক বেছে নেয়। এবং দেখা যায় যে তাদের নিশের মার্কেটে পর্যাপ্ত ডিমান্ড থাকে না। কারণ, নতুন ব্লগাররা লেটেস্ট টুলস এবং আপডেটেড টেকনিক গুলোর ব্যবহার সঠিকভাবে করে না।

কিন্তু আমি চাই আপনি সফল হন।

আপনার প্যাশন বা ইন্টারেস্ট নয়, মার্কেট ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে আপনার ব্লগের নিশ বা টপিক সিলেক্ট করুন।

তাই আপনার ব্লগিং শুরু করার জন্য প্যাশন বা আগ্রহের উপর ভিত্তি করে নয়, বরং নিচের ৩টি বিজনেস ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে আপনার ব্লগের নিশ বা টপিক সিলেক্ট করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সফল হাওয়ার জন্য।

  • অডিয়েন্স পটেনশিয়াল – আপনার নিশের ট্র্যাফিক কতটা ব্যয় করতে ইচ্ছুক।
  • প্রোফেশনাল দক্ষতা – আপনার নিশ কি পেশাগত দক্ষতার সাথে সঙ্গতিপুর্ন।
  • মার্কেট ডিমান্ড – আপনার নিশের কতটা চাহিদা আছে মার্কেটে।

অনলাইন ইনকামের উপর আরও ব্লগ পোস্ট পেতে আমার “অনলাইন ইনকাম গাইডলাইন” ফলো করুন।

নিচে আমি উপরের প্রত্যেকটি বিষয় এক-এক করে বিশদ বর্ননা করছি।

১। অডিয়েন্স পটেনশিয়াল

আপনি যদি আপনার ব্লগে কোন ভ্যালুয়েবল প্রোডাক্ট অফার বা সেল করে ইনকাম করতে চান, তাহলে আপনাকে আপনার ভিজিটরদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।

একজন ব্লগার হিসাবে, আপনার ভিজিটরদের চ্যালেঞ্জগুলি খুবই ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ী তাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে সমস্যার সমাধান দিতে হবে।

আপনি যে টপিকগুলোতে বেশি এ্যাক্টিভ থাকেন এবং যেখানে আপনার দক্ষতা এবং একই সাথে আগ্রহ আছে। সেই টপিকে আপনি একজন বিশেষজ্ঞের মত কাজ করতে পারবেন।

তাহলে, আপনার ব্লগের নিশ সিলেক্ট করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর কোনটি?

উত্তর হচ্ছে – আপনি যে নিশ নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন, সেই নিশের যে টার্গেটেড ভিজিটর আছে, তারা কতটা ব্যয় করতে ইচ্ছুক।

বিষয়টা কি এতই সহজ! আসুন, আপনাদের বিষয়টা ক্লিয়ার করে দেই …

একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝাই আপনাদের…

ধরুন, আপনি হোম ডেকোরেইশন নিয়ে একটা ব্লগ শুরু করতে চাচ্ছেন।

এখন আপনার এই ব্লগে কিন্তু বিভিন্ন ধরণের ট্র্যাফিক আসবে, রাইট! এদের মধ্যে থাকবে পেশাদার ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, ডিজাইনের ছাত্রছাত্রী এবং এমনকি বাড়িতে থাকা আমাদের মা-বোনেরা যারা গৃহ সজ্জার খুঁটিনাটি জানতে চান।

এখন আপনি একটি নতুন ব্লগ তৈরি করবেন এবং আপনার পাঠকদেরকে একটি সেলস ফানেলে নিয়ে আসবেন এই নিশ থেকে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার জন্য:

  • প্রথমত, আপনি দর্শকদের আকর্ষণ করার জন্য অনেক ভালোমানের কন্টেন্ট তৈরি করবেন।
  • এরপর, আপনার ভিজিটরদের ভ্যালুয়েবল কিছু একটা (ই-বুক) অফার করবেন ইমেইলে সাবস্ক্রাইব করার জন্য।
  • নেক্সট, আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করার জন্য তাদের কাছে হোম ডেকোর পণ্য বা ব্র্যান্ডের প্রচার করবেন।
  • ফাইনালি, আপনি আপনার ইমেল সাবস্ক্রাইবারদের কাছে ৩-১৫ হাজার টাকা মুল্যের অনলাইন কোর্স অফার করবেন (মানি-ব্যাক গ্যারান্টি সহকারে) “কিভাবে প্রোফেশনালদের মত ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে হয়” এমন কোন কোর্স বা এর থেকেও বেস্ট কিছু।

এই সিস্টেমে ভুল কিছু খুঁজে পাচ্ছেন? এটাই বেশির ভাগ ব্লগাররা করে থাকে। যার মাধ্যমে দীর্ঘ কাজের পর তারা কিছু ভিজিটর পায়, যার মাধ্যমে তারা প্যাসিভ ইনকাম করে থাকে।

কিন্তু এই বড়িতে বসে থাকা মা-বোনেরা, কলেজ স্টুডেন্ট এবং এ্যাভারেইজ মানের স্যালারি পাওয়া জব-হোল্ডাররা কি অতি-লাভজনক ভিজিটর?

আপনার কি মনে হয় – বলুন তো দেখি?

এখানেই লুকিয়ে আছে, আপনার সফলতার সিক্রেট।

সঠিক উত্তর হচ্ছে – না, কারণ নিচে বর্ননা করছি …

আপনার নিশের শুধুমাত্র একটি শব্দ পরিবর্তন করে, আপনি আপনার ব্লগের ইনকাম পটেনশিয়াল ২০০ গুণ বাড়াতে পারবেন।

স্টার্টআপ বিজনেস

আপনি শুধু “হোম ডিজাইন বা ডেকোরেশন” এর পরিবর্তে “রিটেইল ডিজাইন বা ডেকোরেশন” কে সিলেক্ট করুন। আর দেখুন ম্যাজিক…

ওকে, একটু দাড়ান… বুঝিয়ে বলছি!

আপনি যদি ব্যক্তির পরিবর্তে ব্যবসার কাছে বিক্রি করেন, তাহলে আপনি দুটি কারণে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন। প্রথমটি হচ্ছে যে তাদের কাছে ফান্ড বা টাকার অভাব নেই। দ্বিতীয়ত, এটি তাদের নিজের পকেট থেকে দিতে হচ্ছে না।

এই মেথডের সবচেয়ে ভালো বিষয়টি হচ্ছে যে – আপনি ব্লগিং শুরু করলেন, ভালো কন্টেন্ট স্ট্রাটেজি সেট করলেন এবং সেলস ফানেলের ব্যবহার করলেন যা B2C “হোম ডিজাইন” এবং B2B “রিটেল ডিজাইন” উভয় নিশের জন্যই কিন্তু সেইম।

এখানে,

B2C = বিজনেস টু কাস্টোমার

B2B = বিজনেস টু বিজনেস

এখানে ভাল দিক হচ্ছে: যেখানে B2C “হোম ডিজাইন” এর মিনিটাইজেশন (ইনকাম ভ্যালু) ৩-১৫ হাজার টাকার কোর্সে আটকে আছে, অপরদিকে B2B তে “রিটেইল ডিজাইন” নিশের ইনকাম পটেনশিয়াল কিন্তু এখানেই থেমে থাকছে না।

আপনি আপনার নিজের ব্র্যান্ড ইমেইজ তৈরি করতে পারবেন, যেখানে আপনি একজন B2B হোম বা ইন্টেরিয়র ডিজাইন স্পেশালিস্ট হিসাবে পরিচিতি পাবেন।

এবং একজন ইফুয়েন্সার ডিজাইনার হিসেবে এফিলিয়েট মার্কেটিং বা কোর্স সেলিং এর পাশাপাশি কনসালটেন্সি সার্ভিস সেল করে অনেক গুণ বেশি ইনকাম করতে পারবেন।

এজন্য শুধু আপনার ভিজিটরদের পেইন পয়েন্টগুলি বোঝাই যথেষ্ট নয়।

অডিয়েন্স পটেনশিয়াল অনুযায়ী নিশ সিলেকশন করার সময় আপনাকে প্যাশন নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে, লো-ভ্যালু ভিজিটরের পিছনে না ছুটে, প্যাসিভ ইনকামের পাশাপাশি আপনাকে ৫/৭ জন হাই-ভ্যালু ক্লায়েন্ট এর দিকে ফোকাস দিতে হবে, খুবই অল্প সময়ে অনেক বেশি আয় করার জন্য।

ইন্ডাস্ট্রি বাজেট

আমি আশা করি, আপনি আমার পয়েন্ট গুলো বুঝতে পারছেন যে কেন এই সিস্টেমের মাধ্যমে, আপনি একটি নতুন ব্লগ থেকে ৩-৬ মাসের মধ্যে ১০০০ ডলার প্রতি মাস উপার্জন করতে পারবেন।

২। প্রোফেশনাল দক্ষতা

অডিয়েন্স পটেনশিয়ালের পর আমাদের নেক্সট স্টেপ হচ্ছে স্ট্রাটেজিক এ্যাডভান্টেজ গুলো খুঁজে বের করা যা আমাদের অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে সাহায্য করবে।

এবার আমরা কথা বলবো যে, আপনি আপনার প্রোফেশনাল দক্ষতা ব্যবহার করে কিভাবে একটি পার্ফেক্ট নিশ সিলেক্ট করবেন আপনার ব্লগের জন্য।

আপনার নিজেকে জিজ্ঞেস করুন …

  • আপনার প্রোফেশনাল দক্ষতা কোন লেভেলের – স্টার্টিং, মিড অথবা এক্সপার্ট?
  • এই সেক্টরে আপনার কতটা সংযোগ আছে?
  • এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কি আপনি একটা প্রোফিটেবল ব্লগ তৈরি করতে পারবেন?
  • আমি যদি আমার নিশের উপর কোন সাইটে গেস্ট পোস্ট লিখতে চাই, তাহলে তারা আমাকে কতটা গুরুত্ব সহকারে নেবে?

আপনি যদি সত্যি একটি সফল ব্লগ তৈরি করতে চান, তাহলে প্রথমেই আপনাকে সেই নিশের উপর আপনার প্রভাব তৈরি করতে হবে।

আর অথোরিটি তৈরি করার জন্য আপনাকে আপনার কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হতে হবে। আপনার সেক্টরের দক্ষতা, সংযোগ, প্রোফেশনাল অভিজ্ঞতা ইত্যাদি সবকিছুর ব্যবহার করতে হবে যা আপনি পুর্বে করেননি।

আপনাকে নতুন নতুন সংযোগ তৈরি করে গেস্ট পোস্ট করার জন্য প্রচুর পরিমান আউটরিচ করতে হবে। কারণ, আপনার ব্লগের সফলতা অনেকটা নির্ভর করবে এর উপর যদি আপনি ফ্রি ট্রাফিক পেতে চান গুগোল বা ইউটিউব সার্চ থেকে।

আউটরিচের মাধ্যমে আপনার নিশের অন্যান্য ব্লগারদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে, যেন আপনি তাদের অথোরিটি সাইটে গেস্ট পোস্ট করে একটা ডুফলো ব্যাকলিংক পান আপনার ব্লগের জন্য।

এই গেস্ট পোস্টগুলি আপনার সাইটের এসইও জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। এর মাধ্যমে আপনার সাইটের ডোমেইন অথোরিটি বাড়বে যা বর্তমান গুগোল র‌্যাঙ্কিংয়ে ওঠার অন্যতম উপায়।

এরফলে আপনি গুগোল থেকে প্রচুর পরিমান ফ্রি ট্রাফিক টানতে পারবেন আপনার ব্লগে।

কিন্তু আপনি যখন প্রথম ব্লগিং শুরু করবেন তখন আপনার হয়ত খুব বেশি কানেকশন থাকবে না এবং আপনার ব্লগে অনেক বেশি কনটেন্টও থাকবে না।

এই পরিস্থিতে আপনার মনে হতেই পারে যে, “কেন অন্য ব্লগাররা আমাকে তাদের ব্লগে গেস্ট পোস্ট করতে দিবে?”

এই ক্ষেত্রে আপনার প্রোফেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড বা আপনার দক্ষতা আপনাকে দারুনভাবে সাহায্য করবে।

প্রোফেশনাল কানেকশন তৈরি করুন।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একজন ফটোগ্রাফার হন তাহলে নিশ্চয় আপনার কিছু ক্লায়েন্ট আছে, আপনি ফটোগ্রাফি রিলেটেড গ্রুপ গুলোতে এ্যাক্টিভ আছেন, বিভিন্ন মিট-আপে (অনলাইন বা অফলাইন) অনেক প্রভাবশালী ফটোগ্রাফারদের সাথে পরিচিত হয়েছেন বা অনেকের সাথে আপনার ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্কও আছে।

এখন আপনি যদি  এই পরিচিতিকে কাজে লাগাতে পারেন তবে আপনি আপনার ব্লগের গ্রোথকে ত্বরান্বিত করতে পারবেন৷

৩। মার্কেট ডিমান্ড

আপনার ব্লগ শুরু করার পুর্বে, আপনাকে যাচাই করে দেখতে হবে যে – আপনি যেই নিশ বা টপিক নিয়ে লিখতে চান সেগুলো কত পরিমান ভিজিটর গুগোলে সার্চ করে আর সেই সার্চ থেকে আপনি ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন কিনা।

এক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র দুই ধরণের কীওয়ার্ড বেছে নিব যেগুলো মনিটাইজেবল বা এগুলো থেকে ইনকাম করা যায়। সেই ২টি কীওয়ার্ড হচ্ছেঃ

  • “বেস্ট” + পোডাক্ট নেম (লিস্ট পোস্টের জন্য)
  • “হাউ টু” গাইড’স (ইনফরমেশনাল কন্টেন্ট)

এই দুই ধরনের কীওয়ার্ড থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে সবচেয়ে ইনকাম করা যায়।

উদাহরণস্বরূপ…

“বেস্ট” লিস্ট পোস্টের ক্ষেত্রে:

  • ট্রাভেল নিশের ক্ষেত্রে কীওয়ার্ড হতে পারে, “বেস্ট ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স” অথবা “বেস্ট ট্রাভেল ব্যাকপ্যাক”।
  • ফাইন্যান্স নিশের ক্ষেত্রে, “বেস্ট সেভিংস এ্যাকাউন্টস” অথবা “বেস্ট ক্রেডিট কার্ড”।
  • টেক নিশের ক্ষেত্রে, “বেস্ট ভিআর হেডসেট” অথবা “বেস্ট পিএস৫” ইত্যাদি।

যখন ইউজাররা গুগোলে বা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিনে “বেস্ট + প্রোডাক্ট” লিখে সার্চ করে, তখন মূলত তারা ব্লগার দ্বারা রিকমেন্ডেড প্রোডাক্টের গাইডলাইন খুঁজে থাকে। এবং এই সার্চ রেজাল্ট গুলোর বেশিরভাগই এ্যাফিলিয়েট নিশ সাইট হয়ে থাকে।

“হাউ টু” গাইড এর ক্ষেত্রেঃ

  • মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে, “হাউ টু মেক এ্যা ওয়েবসাইট”।
  • লাইফস্ট্যাইলের ক্ষেত্রে, “হাউ টু ডেকোরেইট কিচেন”।
  • হেলথের ক্ষেত্রে, “হাউ টু গেট রিড অফ একনি”।

এই “হাউ টু গাইড’স” গুলো অনেক হাই-কোয়ালিটি এবং দীর্ঘ টিউটোরিয়াল হয়ে থাকে। এই কন্টেন্ট গুলিও এফিলিয়েট লিংক এ্যাড করার জন্য বেশ কার্যকরি।

একটি সমীক্ষায় ৭৭% ব্লগারদের মতে “হাউ টু” কন্টেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগ পোস্ট ফর্ম্যাট যা ভিজিটররা পছন্দ করেন।

তাহলে, মূল অর্থ দাড়াচ্ছে; উপরোক্ত বিষয় গুলোর উপর ভিত্তি করে আপনি আপনার নিশ নির্বাচন করবেন এবং প্রাথমিক ভাবে এই নিশের উপর শীর্ষ ১০টি কীওয়ার্ড সিলেক্ট করবেন।

আর কীওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য সবচেয়ে সেরা এসইও টুলস হচ্ছে [ahrefs] এইচরেফস।

কীওয়ার্ড রিসার্স

যদিও কিছু ফ্রি মেথড আছে কীওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য। কিন্তু প্রোফেশনাল হিসেবে আমার প্রথম পছন্দ ahrefs, একবার ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন কেন?

সঠিকভাবে কীওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য আপনাকে বেশকিছু স্ট্রাটেজি মাথায় রাখতে হবে।

যদি আপনার টপ ৫টি কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম ৫০০০ এর বেশি হয় তাহলে বুঝে নিবেন যে এই নিশে বা টপিকে অনেক আগ্রহী ইউজার আছে।

এরপর আপনাকে কীওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (KD) চেক করে দেখতে হবে (সাধারণত এটি ০-১০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে কম্পিটিশনের উপর ভিত্তি করে)। এজন্য আমরা এসইও টুলস “Ahrefs” এর সাহায্য নিবো। কারণ এর মাধ্যমে আমরা এক ক্লিকেই ওই কিওয়ার্ডের আদ্যপান্ত জানতে পারবো।

যদি আপনার কীওয়ার্ড ডিফিকাল্টি (KD) স্কোর ৩০ এর বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে এই কিওয়ার্ডে কম্পিটিশন অনেক এবং এই সব কিওয়ার্ডে গুগলে টপ পজিশন পাওয়া বেশ কঠিন।

এজন্য আমরা সবসময় সেই সব কীওয়ার্ড গুলো সিলেক্ট করবো বা নিবো যেগুলোর ডিফিকাল্টি স্কোর ৩০ এর নিচে। এরফলে আপনাকে কম কম্পিটিশন ফেস করতে হবে, এবং অল্পও পরিশ্রমে অনেক বেশি ট্রাফিক আনতে পারবেন আপনার ব্লগে।

এবার আমরা “Ahrefs” টুলস ব্যবহার করে ওই কিওয়ার্ডের কম্পিটিশন ডীপ-ডাউন করবো। এজন্য প্রথম পৃষ্ঠার ফলাফল গুলোর ডোমেন রেটিং (DR) এবং SERP পজিশন গুলো পর্যবেক্ষন করবো।

যদি দেখেন যে, প্রথম পেজের ১০টি রেজাল্টের সবগুলোরই ডোমেইন রেটিং (DR) ৫০-এর বেশি, অপরদিকে আপনার নতুন শুরু করার ব্লগটির ডোমেইন রেটিং (DR) 0, তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায় যে আপনি ওই কিওয়ার্ডে প্রথম পেজে আসতে পারবেন না এবং এর ফলে কোন ট্রাফিক পাবেন না।

তবে আপনি যদি দেখেন যে, টপ ১০টি রেজাল্টের মধ্যে ২টি সাইট আছে যাদের ডোমেইন রেটিং (DR) ৩০ এর নিচে। তখন বুঝে নিতে হবে যে এটা একটা ভালো ইন্ডিকেশন যে আপনি আপনার হাই-কোয়ালিটি কন্টেন্ট দ্বারা নির্দিস্ট সময়ের মধ্যে তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন।

আর একটি ফ্যাক্টর আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে, যদি দেখেন গত ৬ মাসে গুগোলের প্রথম পেজের টপ ১-৫ পজিশনে কোন চেঞ্জ আসেনি। তাহলে বুঝে নিবেন যে, এই কিওয়ার্ডের কম্পিটিশন অনেক বেশি।

সবশেষে, ব্লগের মার্কেট ডিমান্ড নিয়ে রিসার্স করার সময় এবং ফাইনাল কীওয়ার্ড সিলেক্ট করার সময় যে বিষয়গুলো আপনার মাথায় রাখতে হবে:

  • কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম মিনিমাম ২০০০+ হতে হবে।
  • কীওয়ার্ড ডিফিকাল্টি স্কোর ৩০ এর নিচে থাকতে হবে।
  • গুগোলের প্রথম পেজে মিনিমাম ২টা সাইট থাকতে হবে যাদের ডোমেইন রেটিং ৩০ এর নিচে।
  • SERP পজিশনে বিগত ৬ মাসের মধ্যে টপ ১-৫ পজিশনে চেঞ্জ থাকতে হবে।

এবং বেশি কন্টেন্ট লেখার চাইতে কীওয়ার্ড রিসার্সের উপর বেশি ফোকাস দিতে হবে।

প্রতিটি ব্লগ পোস্টের জন্য একটি মেইন কীওয়ার্ড (উপরের বুলেট পয়েন্টের উপর নির্ভর করে) টার্গেট করতে হবে সাথে সারফার এসইও টুলস [SurferSEO] দ্বারা অপ্টিমাইজ করতে হবে যেন সিমেন্টিক কীওয়ার্ড এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়।

সারফার এসইও টুলস দ্বারা অপ্টিমাইজ করতে হবে

মার্কেট ডিমান্ড, প্রোফেশনাল দক্ষতা এবং অডিয়েন্স পটেনশিয়াল এর উপর ভিত্তি করে আপনার নিশ নির্বাচন করতে হবে।

এমন নিশ বা টপিক নিয়ে কাজ করার চেস্টা করুন যার সাথে আপনি প্রোফেশনালি এ্যাটাচ বা একটি অংশ আপনি তাহলে আপনি ইউজারদের চ্যালেঞ্জগুলি ভালোভাবে অনুধাবন করে অনেক ভালো সমাধান দিতে পারবেন।

সাথে এও লক্ষ্য রাখবেন যেন আপনার নিশে বিজনেস-টু-বিজনেস পটেনশিয়াল থাকে, তাহলে আপনি আপনার ইনকামকে ২০০ গুণ বাড়াতে পারবেন।

আপনার নেটওয়ার্ক, কাজের অভিজ্ঞতা, এবং আপনার সবকিছুর জ্ঞানকে ব্যবহার করুন। এবং আরও নিশ্চিত করুন যে আপনার নিশের মার্কেটে অনেক ভালো ডিমান্ড আছে।

একটা কথা মনে রাখবেন, প্যাশন দিয়ে ইনকাম করা যায় না; কিন্তু অর্থ প্যাশন ক্রিয়েট করে।

Reko Ashikur Rahman

Author

Reko Ashikur Rahman

Reko is a full-time blogger and affiliate marketer. Join Reko and 50k monthly readers on Imreko.com to learn how to start and develop your IT startup business. As a Head of Digital Marketing, Reko managed digital marketing teams for large IT companies.

Comments (10)

  1. Avatar
    osman
    December 12, 2022 Reply

    excellent

    • Reko Ashikur Rahman
      Reko Ashikur Rahman
      December 22, 2022 Reply

      আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামত দেবার জন্য।

  2. Avatar
    md shayful Islam
    June 16, 2023 Reply

    অসাধারণ স্যার …

    • Reko Ashikur Rahman
      Reko Ashikur Rahman
      July 8, 2023 Reply

      ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

  3. Avatar
    Sayed
    July 20, 2023 Reply

    Just awesome

    • Reko Ashikur Rahman
      Reko Ashikur Rahman
      July 21, 2023 Reply

      ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

  4. Avatar
    Rakibul Hasan
    July 25, 2023 Reply

    Best and SEO Informative content

    • Reko Ashikur Rahman
      Reko Ashikur Rahman
      July 26, 2023 Reply

      ধন্যবাদ Rakibul Hasan, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

  5. Avatar
    ROKIB VI
    August 10, 2023 Reply

    JAJAKALLAH ,LOT OF THANKS FOR KNOWLEDGEABLE GUIDE..TAKE CARE ,KEEP IN TOUCH

    • Reko Ashikur Rahman
      Reko Ashikur Rahman
      August 14, 2023 Reply

      ধন্যবাদ, আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!