অনলাইন ইনকাম
কাজ শিখে ঘরে বসে
অনলাইনে ইনকাম করুন!
প্যাসিভ ইনকাম হচ্ছে বর্তমানে অনলাইন ইনকামের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম কারণ এই মেথডে টাকা ইনকাম করার জন্য সারাক্ষণ কাজের পিছনে সময় ব্যায় করতে হয়না।
এটি এমন একটি ইনকাম ব্যবস্থা যেখান থেকে অনলাইনে ইনকাম করার জন্য একটা নির্দিস্ট সময় কাজ করে আপনি আপনার ফ্রি সময়েও টাকা আয় করতে পারবেন।
এজন্যই প্যাসিভ ইনকামকে বলা হয় "ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে টাকা ইনকামের মাধ্যম"। মূলত কোনো একটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট একটা সময় অতিবাহিত করে পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় ধরে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়।
তাই বর্তমান সময়ে প্যাসিভ ইনকাম দিন দিন অধিক জনপ্রিয় এবং আয়ের ভরসা যোগ্য একটি মাধ্যম হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।
আমরা সাধারণত দুই ভাবে টাকা ইনকাম করে থাকি। একটি হচ্ছে এ্যাক্টিভ ইনকাম, আর অন্যটি হচ্ছে প্যাসিভ ইনকাম।
এ্যাক্টিভ ইনকাম হচ্ছে, একটা নির্দিস্ট সময়ের কাজের বিনিময়ে আমরা যা আয় করি সেটাই এ্যাক্টিভ ইনকাম।
যেমন, মাস শেষে আমি অফিস থেকে স্যালারি পাই বা একজন ডে-লেবার সারাদিনের নির্দিস্ট কাজের শেষে তার পেমেন্ট পান ইত্যাদি।
এ্যাক্টিভ ইনকামে কাজ করলে আপনি টাকা পারবেন, আর কাজ না করলে কোন টাকা পাবেন না।
ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে এ্যাক্টিভ ইনকাম কারণ, যতক্ষণ আপনি ক্লায়েন্টের কাজ করবেন সেই কাজের উপরই আপনি পেমেন্ট পাবেন, কাজ শেষ হওয়ার পর কিন্তু আর কোন পেমেন্ট পাবেন না।
এজন্যই এ্যাক্টিভ ইনকাম কে ফ্লেক্সিবল ইনকাম ধরা হয় না, কারণ এখানে কাজের জন্য এবং পেমেন্টের জন্য পুরোপুরি অন্যের উপর নির্ভয় করতে হয়।
অফিস জব এ্যাক্টিভ ইনকাম কিন্তু যখন তখন কিন্তু আপনার জব চলে যাবার সম্ভবনা আছে, এজন্য এ্যাক্টিভ ইনকাম ফ্লেক্সিবল না (ব্যতিক্রম বাংলাদেশের সরকারী চাকুরী)।
অপরদিকে, প্যাসিভ ইনকাম ঠিক এর উল্টো কারণ, প্যাসিভ ইনকামের জন্য আপনি একটি নির্দিস্ট সময় কাজ করে পরবর্তিতে দীর্ঘসময় ধরে ইনকাম করতে পারবেন (শুধু মেইন্টেনেন্স করতে হবে)।
উদাহরণস্বরূপ – আপনি একটা ৬-তালা বাড়ী তৈরি করলেন। এখানে কিন্তু বাড়ীটা তৈরি করার সময় আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে। বাড়ী তৈরি হলে আপনার কাজ শেষ, এখন মাসে মাসে ভাড়া উঠাবেন আর মিনিমাম মেইন্টেইনেন্স করতে হবে।
এছাড়াও, আমি যেমন আমার ডে-জবের পাশাপাশি এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করি এবং আমার ডে-জবের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি আয় করে থাকি এর মাধ্যমে।
এর জন্য শুরুতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে কিন্তু এখন শুধু মাত্র কিছু মেইন্টেইনেন্স এর কাজ করতে হয়, যা আমি ফ্রিল্যান্সার দ্বারা করিয়ে থাকি।
আর এজন্যই বর্তমানে প্যাসিভ ইনকাম অনেক বেশি জনপ্রিয়। আপনি জব বা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি প্যাসিভ ইনকাম করতে পারবেন।
এ্যাক্টিভ ইনকাম VS প্যাসিভ ইনকামঃ
- এ্যাক্টিভ ইনকাম হচ্ছে সরাসরি কাজে নিযুক্ত থেকে টাকা উপার্জনের প্রক্রিয়া অন্য দিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করে পরবর্তী দীর্ঘ সময় ধরে টাকা উপার্জনই হলো প্যাসিভ ইনকাম।
- এ্যাক্টিভ ইনকামে সার্বক্ষণিক কাজে নিযুক্ত থাকতে হয় অপরদিকে প্যাসিভ ইনকামে একটি নির্দিষ্ট সময় পর খুব বেশি কাজ করার প্রয়োজন হয় না।
- এ্যাক্টিভ ইনকাম এর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে কেবল মাত্র একটি কাজেই নিযুক্ত থাকতে হয় কিন্তু প্যাসিভ ইনকাম বিভিন্ন উপায়ে একের অধিক প্রোজেক্ট একই সময়ে করা যায়।
- এ্যাক্টিভ ইনকম এ কাজ না করলে ইনকাম আসা বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু প্যাসিভ ইনকাম একটি চলমান প্রক্রিয়া আপনি কাজ না করলেও আপনার ইনকাম আসবেই।
- এ্যাক্টিভ ইনকাম দ্রুত গতি সম্পন্ন হলেও মুনাফা বৃদ্ধির হার তুলনা মূলক কম অপরদিকে প্যাসিভ ইনকাম এর গতি ধীর হলেও মুনাফা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
- এ্যাক্টিভ ইনকাম কম বা বেশি হতে পারে কাজের ধরণের উপর নির্ভর করে কিন্তু প্যাসিভ ইনকাম বেশির ভাগ সময়ে ইনকাম গ্রাফ উপরের দিকে যায়।
চাকরি কিংবা পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের ভিন্ন একটি উৎস আপনার জীবনকে অনেক বেশি সহজ করে তুলতে পারে। কিংবা আপনি যদি একজন গৃহিনীও হন, প্যাসিভ ইনকাম এর মাধ্যমে পরিবারকে সহায়তা করতে পারবেন।
চলুন দেখে নেয়া যাক কেন এই প্যাসিভ ইনকাম সেরা ?
- একসাথে একাধিক কাজ এ সময় দেয়া যায়
- চাকরির পাশাপাশি ভিন্ন একটি আয়ের উৎস তৈরী করে
- একজন গৃহিনী ঘরে বসেই প্যাসিভ ইনকাম করতে পারে
- একজন শিক্ষার্থী তার পড়াশোনার পাশাপাশি এটি করতে পারে
- দীর্ঘদিন সময় দেয়ার প্রয়োজন পরে না
- মুনাফা বৃদ্ধির পরিমান বেশি
- একটি বিশ্বস্থ উপার্জন মাধ্যম
- একাধিক আয়ের উৎস তৈরী করা
আসুন, আমার প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম মাধ্যম এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটা সাইটের স্ট্যাটিস্টিক আপনাদের সাথে শেয়ার করি, তাহলে আপনারা আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন যে, কেন প্যাসিভ ইনকাম সেরা…
আমার নিশ সাইটটি ছিল, ইলেকট্রিক শেভার নিয়ে। আমি আগেই বলেছি যে, আমি আমার ডে-জবের পাশাপাশি এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকি। এই সাইটটি নিয়ে একটা কেস স্ট্যাডি লিখবো (স্ক্রিন শট সহ) যা এই ব্লগেই পাবেন।
এই একটি সাইট থেকে আমি এক বছরে আয় করি ১৪০০০+ ডলার (বর্তমান বাংলাদেশি টাকায় ১৩-১৪ লাখ) অর্থাৎ প্রতি মাসের এ্যাভারেইজ আয় ছিল ১১৫০+ ডলার বা ১ লাখ ১০ হাজার টাকার বেশি।
এবং এক বছর পরে এই নিশ সাইটটি আমি এফই-ইন্টারন্যাশনাল এর মাধ্যমে সেল করি ৩৬৫০০ ডলার যার বর্তমান বাংলাদেশি টাকায় মূল্য ৩৫-৩৬ লাখ টাকার বেশি।
এখন যদি আমি এই সাইটের মাসিক ইনকাম এবং সেলিং ইনকাম এক করি তাহলে দ্বারায় ৫০,৫০০ ডলার ( বর্তমান বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৮-৫০ লাখ)।
এবার যদি এই একটি সাইটের টোটাল আয়কে ১২ মাস দ্বারা ভাগ করি তাহলে এ্যাভারেইজ মাসিক ইনকাম দ্বারায় ৪২০০+ ডলার যার বর্তমান মূল্য ৪-লাখ টাকা।
অর্থাৎ আমি আমার অফিস জব থেকে মাসে প্রায় ৪গুণ আয় করি শুধু মাত্র আমার একটি মাত্র নিশ ওয়েবসাইট থেকে। কিন্তু এর জন্য আমাকে পরিশ্রম করতে হয় আমার অফিস আওয়ারের মাত্র ৩ ভাগের ১ ভাগ।
আশাকরি আপনি বুঝতে পারছেন কেন প্যাসিভ ইনকাম সেরা এবং কেন আপনারও আমার মত প্যাসিভ ইনকাম করা উচিত।
অনলাইন ইনকাম এর যতগুলো মাধ্যমে আছে এর মধ্যে প্যাসিভ ইনকাম সবচেয়ে জনপ্রিয়ও ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি। এমনকি অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি প্যাসিভ ইনকাম মডেলও ফলো করে থাকেন।
প্যাসিভ ইনকাম অনেকটা রয়্যালটি ইনকামের মত। ধরুন আপনি একজন রাইটার, লিখতে ভালোবাসেন। তো আপনি একটা বই লিখলেন, আর এই লিখতে কত দিন আপনার লাগবে সেটা অবশ্যই আন্দাজ করতে পারছেন।
আবার যখন বই লিখছেন তখন কিন্তু আপনার কোন ইনকাম হচ্ছে না, রাইট? বই লেখা শেষে যখন আপনি আপনার বইটা কোন পাবলিশার্স থেকে পাবলিশ করবেন, এরপর সেই বই বিক্রি যখন শুরু হবে ঠিক তখনই আপনার ইনকাম আসা শুরু হবে।
এখন কিন্তু আপনাকে আর কোন পরিশ্রম করতে হচ্ছে না, পরিশ্রম যা করার সেটা আপনি ওই বইটি লেখার সময় করেছেন। এখন এই বই দীর্ঘ সময় ধরে যত কপি বিক্রি হবে তত টাকা আপনার পকেটে আসতেই থাকবে।
এটাই হচ্ছে প্যাসিভ ইনকাম। এবার বুঝেছেন, কেন আমি অনলাইন ইনকাম এর মধ্যে প্যাসিভ ইনকাম এত পছন্দ করি। এবং আমি চাই আপনিও আমার মত প্যাসিভ ইনকাম করেন।
তবে, প্যাসিভ ইনকামের জন্য প্রথমে আপনাকে সময় দিয়ে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস তৈরি করতে হবে। যারা ইন্সট্যান্ট ইনকাম পছন্দ করেন তাদের জন্য প্যাসিভ ইনকাম না।
তবে আপনার যদি ধৈর্য ধরে কাজ করার মানুসিকতা থাকে তাহলে প্যাসিভ ইনকাম আপনার জীবনকে পাল্টে দিবে। কারণ, অনেক আয় করার সুযোগ আছে এই সেক্টরে।
অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম এর মাধ্যমে সমূহঃ
- এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
- ই-বুক রাইটিং
- ভিডিও কন্টেন্ট ক্রিয়েশন
- অনলাইন কোর্স
- ফটোগ্রাফ সেল
- স্পন্সরড পোস্ট
- ব্লগিং / ভিডিও ব্লগিং
- ডিজাইন সেলিং
- এ্যাডভার্টাইজমেন্ট
- এ্যাপ পাবলিশিং ইত্যাদি
কিভাবে প্যাসিভ ইনকাম শুরু করবেন?
প্যাসিভ ইনকাম করার জন্য, প্রথমে আপনাকে শিখতে হবে। আর শিখতে চাইলে আপনি অনেক ভাবেই শিখতে পারবেন। আপনি আমার নিচের ব্লগ পোস্ট গুলো স্ট্যাডি করে অনেক ভালো কিছু শিখতে পারবেন আশাকরি।
তবে, অনলাইনে যেমন ইউটিউব বা গুগলে সার্চ করেও অনেক ভালো ধারণা পেতে পারেন।
প্যাসিভ ইনকাম করার জন্য, প্রথমে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে যে আপনি কোন মাধ্যমে আয় করতে চান। এরপর সেই সেক্টরের দক্ষ একজন মেন্টর খুজে বের করতে হবে।
কারণ, আপনি যদি প্রোফেশনাল লেভেল এর আয় করতে চান তাহলে আপনাকে স্টেপ-বাই-স্টেপ শিখতে হবে, এজন্য অবশ্যই কোন প্রো লেভেলের মেন্টরের ডিরেক্ট তত্ত্বাবধায়নে বা তার কোর্স করতে হবে।